মোশাররফ হোসেন: ২০ বছর পর বিশ্ব পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদল ফিরে গেছে নিজভূমে। সকল রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত আফগান সরকার শীঘ্রই ঘোষণা করবে তালেবান।
তবে বড় রকমের মতভেদের জন্য নরদারণ এলায়েনসহ বেশ কিছু গোষ্ঠীর এ সরকারের সংগে থাকবে কী না সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে ।
আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করার পর বিশ্ব পরাশক্তি ও দেশসমূহ বিপদের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেলে যাওয়া আধুনিক যুদ্ধবিমান, ট্যাংক সহ অন্যান্য অসরোপাতিসহ বৃহৎ সামরিক শক্তিতে পরিণত হবে বলে তারা আতংকিত।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন জাতির উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিয়ে বলেছেন, আফগানিস্তানে যুদ্ধ সমাপ্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সকল সেনাদল ফিরেছে। বছরে বিশাল খরচ এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমেরিকার নাগরিকদের রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাস বিরোধী নীতি অব্যাহত রাখবে। এটা আমাদের দায়িত্ব । এদৃষ্টিতে যুক্তরাষ্ট্র সফল হয়েছে। সিএনএন নিউজ ও সিটিভি ,রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তবে পাকিস্তান ও চীনের সমর্থন নিয়ে আফগানিস্তান আগামীতে কতটুকু শান্ত থাকবে তা নিয়ে ভারত সতর্ক রয়েছে বলে ভারতের মিডিয়া জানিয়েছে।
কাবুল বিমান বন্দর নিরাপত্তাও ব্যবস্থাপনার জন্য তালবানরা তুরস্কের সহযোগিতা চেয়েছে। তালেবানের চৌকশ যোদ্ধাদের কাবুল বিমান বন্দর নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়েছে।
অন্যদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে র পর কাবুল বিমান বন্দরের সাথে ভিন্ন মতের আফগান নাগরিক ও বিদেশি নাগরিকদের জন্য’ নিরাপত্তা জোন’ করতে আফগান সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে । এতে জাতিসংঘ সহযোগিতা করবে।
টুইটারে দেশের সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে জো বাইডেন লিখেছেন, ‘আফগানিস্তানে আমাদের সামরিক উপস্থিতি শেষ হল। গত ১৭ দিনে আমেরিকার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ আকাশপথে সব থেকে বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ সম্পন্ন করেছে আমাদের বাহিনী। ১ লক্ষ ২০ হাজারের বেশি মার্কিন নাগরিক, সহযোগী দেশগুলির নাগরিক এবং আমেরিকার আফগান সহযোগীদের উদ্ধার করা হয়েছে। এই কাজ করতে গিয়ে অতুলনীয় সাহসিকতা, পেশাদারিত্ব এবং দৃঢ়তার ছাপ রেখেছে আমাদের সেনাবাহিনী।’
প্রেসিডেন্ট বাইডেন এ কথা বললেও পেন্টাগনের তরফে জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জি স্বীকার করে নিয়েছেন, যত মানুষকে আফগানিস্তান থেকে উদ্ধার করা যাবে বলে আশা করা হয়েছিল, তা শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি।
সোমবার কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উদ্ধারকারী বিমানে মার্কিন সেনা, কম্যান্ডোরা ছাড়াও আফগানিস্তানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতও ফিরে যান।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে আল-কায়েদার জঙ্গি হামলার পর আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনী অভিযান শুরু করে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ৩১ আগস্টের সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার সম্পূর্ণ করলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন অভিযানে ২০০১ সালে ক্ষমতাচ্যুত ইসলামি কট্টরপন্থী গোষ্ঠী তালেবান আবারও ক্ষমতায় ফিরেছে গত ১৫ আগস্ট। বিশ বছর পর মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানের মাটি ছাড়লো।