আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রতিনিয়ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কথা বলেন। তার কথায় আমরা সবাই একটু বিনোদন পাই, কৌতুকবোধ করি। তার কথা বলার ভঙ্গি খুব সুন্দর। তার বসে থাকার ভঙ্গি খুব সুন্দর, তিনি যে আসনে বসে কথা বলেন সেটাও খুব সুন্দর। তিনি দেখতে অত্যন্ত সুদর্শন মানুষ। চমৎকার কটি পরে, তার ওপরে নৌকা মার্কার পিন পড়েন। সেটা কিসের আমরা জানি না? পত্র-পত্রিকায় বের হয়েছে তার ঘড়িগুলো নাকি এক একটি ৩৬ লাখ, ৫২ লাখ, ১ কোটি এরকম দামের। আসলে দাম কত আমরা সেটা জানি না? তিনি গতকালও বিএনপির আন্দোলন সম্পর্কে কটাক্ষ করেছেন। কিন্তু প্রত্যেকদিন বিএনপিকে নিয়েই কথা বলেন। অন্যদিকে বলেন, বিএনপি নেই। তাহলে প্রতিদিন বিএনপি সম্পর্কে কথা কেন বলেন? কারণ আপনারা জানেন, বিএনপি আছে, খুব ভালো করে আছে এবং আপনাদের ওপর চড়াও হয়ে বসেছে বলেই প্রতিদিন বিএনপি নিয়ে কথা বলেন।
এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা জানেন, বিএনপি আছে, খুব ভালো করে আছে এবং আপনাদের ওপর চড়াও হয়ে বসেছে বলেই প্রতিদিন বিএনপি নিয়ে কথা বলেন।’
আজ শনিবার (১৩ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ বিতরণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব উল্লেখ করেন, আপনাদেরতো লজ্বা হওয়া উচিত। বিশেষ করে, আমাদের সাধারণ সম্পাদক সাহেবের। আপনার এলাকা বসুরহাট, আপনার এলাকা নোয়াখালী সেখানে কী হচ্ছে? আজকে পত্রিকায় আসছে, সেখানে একজন সাংবাদিকসহ যে দুইজন খুন হয়েছে তাদের মধ্যে মৃত শ্রমিকের ভাই মামলা করতে গিয়েছিলো। কিন্তু পুলিশ তার মামলা নেয়নি। কাদের মির্জার বিপক্ষে মামলা নেয়নি। কারণ, তিনি তো শুধু কাদের মির্জা নয়, তিনি বাংলােদশের ২য় শক্তিশালী ক্ষমতাধর মানুষ ওবায়দুল কাদের সাহেবের ভাই। কোথায় বিচার, কোথায় ন্যায়ের শ্বাসন? তাই আমি বলেছি, বিএনপির সমালোচনা করার আগে আপনারা আপনাদের নিজের ঘর সামলান। প্রতিদিন যে মারামারি তা সামলান।
তার মতে, লুটের বণ্টন নিয়ে, বাংলাদেশকে যে লুট করেছে সেই লুটের বন্টন নিয়ে মারামারি করে। তিনি বলেন, এদের লক্ষ্য এখন একটাই। সেটা হচ্ছে বাংলাদেশকে লুট করে নেয়া। আমরা ছোটবেলা মায়ের মুখে শুনতাম, খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো, বরগি এলো নেমে। সেই বরগিদের ভূমিকায় রয়েছে তারা। বরগিরা যেমন বাংলাদেশের কৃষকদের সম্পদ লুট করে নিয়ে যেতো ঠিক সেইভাবে আজকে তারা সমগ্র বাংলাদেশকে লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। তারা বিদেশে বেগমপাড়া, ইংল্যান্ড, অ্যামেরিকায় বাড়িঘর তৈরি করছে।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ কখনোই জনগণ এর বন্ধু ছিলো না। আমার দুঃখ হয় যে, আওয়ামী লীগ পাকিস্তান আমলে দেখেছি আমাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গণতন্ত্রের সংগ্রাম করেছেন। আজকে আমাদের এখানে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাহেব উপস্থিত আছেন। তিনি ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন, ভিপি ছিলেন। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ এর যে ভূমিকা আজকে তিনিও সেখানে থাকতে পারেননি। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ এর চরিত্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে। আজ তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। গণতন্ত্র মানলেতো মানুষের কথা বলার সুযোগ দিতে হবে, গণতন্ত্র মানলেতো সবাইকে ভিন্নমত পোষণ এর স্বাধীনতা দিতে হবে, গণতন্ত্র মানলেতো ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এগুলোর মধ্যে তারা নেই। তারাই সব, তারাই মালিক, আমরা সবাই প্রজা। তারা প্রভু আর আমরা সবাই দাস এভাবেই তারা গোটা বাংলাদেশকে দেখেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন এর উপদেষ্টা ও ড্যাব এর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফারহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও ড্যাব-এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চেয়ারপার্সন এর উপদেষ্টা আব্দুস সালাম ড্যাব-এর মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম প্রমুখ।