চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সোনাইছড়ী ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় সাড়ে ৪ শতাধিক মানুষ দগ্ধ ও আহত হয়েছেন।
স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় উপজেলার সোনাইছড়ী ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আমদানিকৃত একটি কন্টেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের আটজন কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়াও গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন। তাদের মধ্যে কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মী গাউসুল আজম ও সীতাকুণ্ডু স্টেশনের রবিউলকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আনা হয়েছে। গাউসুলের শরীরের ৮০ শতাংশ এবং রবিউলের ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীর মৃত্যু ও দগ্ধের ঘটনার বিষয়ে রোববার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৮ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মীর মৃত্যুর এমন ঘটনা আগে কোনো দিন ঘটেনি। প্রায় ২৫ বছর ধরে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কাজ করছি। এর আগে কখনো একটি ঘটনায় এত কর্মীর মৃত্যু হয়নি।
সূত্রে জানা যায়, কেমিক্যাল কনটেইনার থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুন লাগার পর পর কন্টেইনারগুলো একের পর এক বিস্ফোরিত হতে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে কন্টেইনার ডিপোর আশে পাশের ৪-৫ কিলোমিটার এলাকায় ব্যাপক কম্পনের সৃষ্টি হয়। প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় শতাধিক বিভিন্ন বাড়ি-ঘর ও মসজিদের দরজা এ জানালার কাঁচ ভেঙে যায়। এ ঘটনায় জনমনে আতংকের সৃষ্টি হয়।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় অগ্নিকাণ্ডের শুরু হওয়ার প্রায় ১৭ ঘণ্টা পেড়িয়ে গেলেও এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন, কিছুক্ষণ পরপর হচ্ছে বিস্ফোরণ।
আগুন নেভাতে সেখানে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট।এর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ২৫০ জন সদস্য সেখানে উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
জানা গেছে, শনিবার রাতে ডিপোতে আগুন নেভানোর চেষ্টাকালে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা একটি কন্টেইনারের কাছাকাছি থাকা অবস্থায় সেটি বিস্ফোরিত হয়। এতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা হতাহত হন।