ইউক্রেনের রাশিয়া দখলকৃত ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ লক্ষ্য করে মঙ্গলবার একটি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। ক্রেমলিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মস্কোর বাহিনী সেখানে ‘সতর্ক অবস্থায়’ ছিল। ইউক্রেন আরেকটি আঞ্চলিক বিজয় দাবি করার পর এবং মস্কো ক্রিমিয়ান উপদ্বীপে তার অবস্থানকে শক্তিশালী করার কয়েকদিন পর এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপল প্রশাসনিক অঞ্চলের গভর্নর মিখাইল রাজভোজায়েভ টেলিগ্রামে বলেছেন, ‘ড্রোন দিয়ে হামলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী এখন কাজ করছে।’ তিনি বলেছেন, দুটি ড্রোন ‘ইতোমধ্যেই গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।’ রাজভোজায়েভ বলেছেন, কোনও বেসামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং বাসিন্দাদের ‘শান্ত থাকার’ আহ্বান জানিয়েছেন। দেশব্যাপী গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের পর মস্কো ২০১৪ সালে ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করে ইউক্রেনের ক্রেমলিন-বান্ধব প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এটি ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের আক্রমণের জন্য একটি লঞ্চিং প্যাড হিসাবে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাশিয়ান সামরিক ঘাঁটি নিজেদের দখলে নিয়ে উপদ্বীপটি ব্যবহার করেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনীয় বাহিনী ক্রিমিয়ার দিকে দক্ষিণে পাল্টা আক্রমণ চালাচ্ছে এবং এই মাসের শুরুতে সংযুক্ত উপদ্বীপের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের রাজধানী খেরসন পুনরুদ্ধার করেছে। ফেব্রুয়ারি থেকে ক্রিমিয়াতে রাশিয়ান সামরিক স্থাপনায় বা কাছাকাছি বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটেছে। যার মধ্যে অক্টোবরে সেভাস্তোপলের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাশিয়ান নৌ বন্দরে একটি সমন্বিত ড্রোন হামলা হয়েছে। গত সপ্তাহে মস্কো-যুক্ত অঞ্চলের গভর্নর সের্গেই আকসিওনভ বলেছেন, কর্তৃপক্ষ উপদ্বীপে অবস্থান শক্তিশালী করছে।
তিনি বলেন ‘সমস্ত ক্রিমিয়ানদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে সুরক্ষার কাজ করা হচ্ছে।’ ইউক্রেন মঙ্গলবার বলেছে, তারা কৃষ্ণ সাগরের একটি বিচ্ছিন্ন উপদ্বীপের যেখানে লড়াই চলছে তার প্রায় পুরো অঞ্চল পুনরুদ্ধার করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মাইকোলাইভ আঞ্চলিক গভর্নর ভিটালি কিম বলেছেন, ‘আমরা এই অঞ্চলের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করছি। আমাদের কাছে কিনবার্ন স্পিøটে তিনটি বন্দোবস্ত বাকি আছে যাতে আনুষ্ঠানিকভাবে আর যুদ্ধের অঞ্চল না থাকে।’ কৃষ্ণ সাগর দ’ুটি ভাগে বিভক্ত: পশ্চিমে, মাইকোলাইভ অঞ্চলের অংশ হিসেবে এবং পূর্বে খেরসন অঞ্চলের অংশ হিসেবে। এটি খেরসন অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ডিনিপ্রো নদীর দ্বারা ইউক্রেনের বাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা একটি অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলেছিলেন, তাদের সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা ইউক্রেনীয়রা ক্লান্ত না হই তবে বাকি ইউরোপের ক্লান্ত হওয়ার নৈতিক বা রাজনৈতিক অধিকার নেই।’