নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত চার দিনে ফরিদপুরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২০ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ৩২ জনসহ সর্বমোট ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ন্ত্রিত করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের আইসিইউতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় অক্সিজেনের অভাবে চারজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে এসব রোগী অক্সিজেনের অভাবে একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে এবং উপসর্গ নিয়ে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।রোগীর স্বজনেরা অভিযোগ করে বলেন, অক্সিজেনের কারণে তাদের রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এবং শুক্রবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে অক্সিজেনের সংকট দেখা দিলে তারা বিভিন্ন ক্লিনিকে ঘুরেও অক্সিজেন সংগ্রহ করতে পারেননি। ফলে তাদের রোগীরা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা এক রোগীর স্বজন জানান, তার বৃদ্ধা মা ওই হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিকভাবে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেনের সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করতে বলেন। এসময় অক্সিজেন সরবরাহে বিঘ্ন হওয়ায় কিছু রোগী মারা যাবে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এর দশ মিনিটের মধ্যেই চারজন রোগী মারা যান। বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক।
ফরিদপুরের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের ইনচার্জ ডা. অনন্ত কুমার বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালের অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থায় অক্সিজেন কমে গেলে নতুন করে অক্সিজেন ঢোকাতে হয়। এজন্য কিছু সময় নেয়। নতুন করে অক্সিজেন প্রবেশের সময় অক্সিজেনের চাপ বেড়ে যেতে পারে এজন্য কমিয়ে নেয়া হয়। এ কারণে ওই সময়ে অক্সিজেনের অভাবে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে চারজনের মৃত্যুর খবরে সেখানে সাধারণ রোগী ও তাদের স্বজনদের মাছে চরম উৎকণ্ঠান সৃষ্টি হয়। এসময় হাসপাতালের সামনে থাকা অনেক রোগীর স্বজনদের চিৎকার করে কাঁদতে দেখা যায়।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে কোন অক্সিজেন সংকট নেই। এদিকে, ফরিদপুরে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় এবং উপসর্গ নিয়ে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ৩৩৭ জনের পরীক্ষায় নতুন করে ১৭৬ জনের করোনা পজেটিভ হয়েছে। আক্রান্তের হার ৫২ দশমিক ২২ শতাংশ।