বাংলাদেশ টেলিকমিউনেকশন লিমিটেডের (বিটিসিএল) চার কর্মকর্তা সহ ৫ জনকে খালাস দিয়েছে আদালত নয় বছর আগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদকের) পক্ষ থেকে দায়ের করা সাড়ে ১৫ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা থেকে। আজ বুধবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এ রায় দেন।
খালাস পাওয়া ৪ কর্মকর্তা হলেন বিটিসিএলের সাবেক পরিচালক (পরিদর্শন ) মো. মাহবুবুর রহমান, তখনকার বিভাগীয় প্রকৌশলী (আইটিএস) এ কে এম আসাদুজ্জামান, সাবেক সদস্য (রক্ষণাবেক্ষণ ও চালনা) প্রকৌশলী মো. তৌফিক, তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচলক মু. আবু সাঈদ খান। এছাড়াও খালাস পাওয়া অপর ব্যক্তি হলেন অ্যারিস্টোকল সার্ভিসেসের বাংলাদেশ প্রতিনিধি এস এম ইসতিয়াক।
রায়ের বিবরণে বলা হয়, অ্যারিস্টোকল সার্ভিসেস আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার হিসেবে কল আদান প্রদানের জন্য ২০১০ সালে বিটিসিএল এ একটি চুক্তির প্রস্তাব দেয়। পরে তাদের একটি সার্কিটে (এসটিএম-১) সংযোগ দেওয়া হয়। এরপর বিটিসিএলের অর্থ শাখা থেকে , অ্যারিস্টোকলের ২ লাখ ১০ হাজার ৬৫৬ ডলার বকেয়া থাকার তথ্য জানানো হলে অনুমোদিত ৬৩টি সংযোগের মধ্যে ৩৩টি বন্ধ করে দেয় বিটিসিএল।
তারপরও বকেয়া পরিশোধ না করায় ওই বছর নভেম্বরে অ্যারিস্টোকল সার্ভিসেসকে বরাদ্দ সকল সার্কিট বিচ্ছিন্ন করা হয়। কিন্তু পরে যাচাই বাছাই না করেই অ্যারিস্টোকল সার্ভিসেসের সংযোগ পুনরায় চালুর অনুমোদন দেয় বিটিসিএল। মার্কিন ওই কোম্পানি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় বিটিসিএল ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্থায়ীভাবে তাদের সংযোগ বন্ধ করে দেয়।
অ্যারিস্টোকলের কাছে বিটিসিএলের তখন পাওনা ছিল ২৯ লাখ ৭২ হাজার ৮২৪ ডলার। ওই কোম্পানির নামে ব্যাক গ্যারান্টির ১০ লাখ ৭৭ হাজার ৮৪৪ ডলার পরে বাংলাদেশি মুদ্রায় ভাঙিয়ে নেয় বিটিসিএল। তারপরও পাওনা থাকে ১৮ লাখ ৯৪ হাজার ৯৭৯ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৫ কোটি ৫০ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। ওই টাকা ‘পরস্পর যোগশাজসে আত্মসাৎ’ করার অভিযোগে দুদকের তৎকালীন উপ-পরিচালক এস এম সাহিদুর রহমান ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর রমনা থানায় এ মামলা করেন।
২০১৩ সালের ৩০ জুলাই প্রথমে দুই আসামি মো. তৌফিক, আবু সাইদ খানকে বাদ দিয়ে বাকিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে সম্পূরক অভিযোগপত্রে তাদেরও আসামির তালিকায় যুক্ত করা হয়। এ মামলার বিচারকালে রাষ্ট্রপক্ষে ১৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয় বলে আদালতের পেশকার শরীফুল ইসলাম জানান।