বড় দলের বিপক্ষে খেলতে নামলেই যেন কেমন খেই হারিয়ে ফেলে বাংলার নারীরা। পাকিস্তানের পর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচেও যেটির প্রমাণ পাওয়া গেল। কদিন আগে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া বাংলাদেশের কাছে চলতি নারী এশিয়া কাপে প্রত্যাশা ছিল অনেক। এছাড়া টুর্নামেন্টটির বর্তমান চ্যাম্পিয়নও বাংলার বাঘিনীরা। কিন্তু তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার বিপক্ষে জয় ছাড়া তেমন আশানুরূপ পারফর্ম করতে পারেনি বাংলাদেশ।
২০১৮ সালে ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। শনিবার (৮ অক্টোবর) ম্যাচেও একটা জম্পেশ লড়াই দেখার অপেক্ষায় ছিল সমর্থকরা। কিন্তু শক্তিশালী ভারত দেখিয়ে দিল কেন তারা দক্ষিণ এশিয়ার সেরা। ব্যাট হাতে স্মৃতি মান্দানা ও শেফালি বার্মাদের আধিপত্যের দিনে বল হাতেও দারুণ করলেন দীপ্তিরা।
সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখার ম্যাচে খেলতে নেমে নিগার সুলতানা জ্যোতিরা হেরে গেছে ৬৯ রানের বড় ব্যবধানে। অন্যদিকে, চলতি টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচ খেলে চার জয়ে সেমিফাইনালের পথে এক পা দিয়ে রাখল ভারত।
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি। যদিও শেষ পর্যন্ত রুমানার ঘূর্ণিতে ভারতকে ১৫৯ রানে আটকে ফেলা গেছে। কিন্তু রান তাড়ায় যেভাবে খেলা দরকার ছিল, সেখানে পুরোপুরি ব্যর্থ বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ফলস্বরুপ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১০০ করতে পেরেছে স্বাগতিকরা।
মন্থর ব্যাটিংয়ে ইনিংস শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার মুর্শিদা ও ফারজানা। কিন্তু যখনই হাত খুলে খেলার দরকার ছিল তখনই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন তারা। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ সংগ্রহ কাপ্তান নিগার সুলতানা জ্যোতির। সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন তিনি। এছাড়া ফারজানার ৩০ ও মুর্শিদার ২১ ছাড়া কেউই দুই অঙ্কের কোটা পার করতে পারেননি।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ঝোড়ো শুরু পায় ভারত। স্মৃতি মান্দানা-শেফালি বার্মা দুজনেই শুরু থেকে বোলারদের ওপর চড়াও হতে থাকেন। ভারতের দুই ওপেনার কতটা আগ্রাসী ছিলেন দুটি ওভারের পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাবে। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে দুই চার, এক ছয়ে ১৭ রান নেন শেফালি। ষষ্ঠ ওভারে নাহিদাকে টানা তিন চার মারেন স্মৃতি মান্দানা। এক ওভারেই ১৭ রান দেন বাংলাদেশের সেরা স্পিনার। ফলস্বরূপ পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ভারত তুলে নেয় ৫৯ রান।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিপক্ষে হারের পর যেন চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা করেই মাঠে নেমেছিল ভারত। বাংলাদেশের বোলারদের ওপর প্রতি ওভারেই চড়াও হন তারা। ১০ ওভার শেষে ৯১ রান তুলে নেন স্মৃতি ও শেফালি জুটি। ভারতের অন্যতম সফল এ জুটি এদিন কঠিন পরীক্ষা নিলেন বাংলাদেশের বোলারদের।