এগিয়ে থাকা কৃষি অঞ্চল যশোরের কৃষক স্মার্ট কার্ড পাচ্ছেন। ‘স্মার্ট কৃষি কার্ড ও ডিজিটাল কৃষি পাইলট’ প্রকল্পের আওতায় তাদের এই কৃষি কার্ড বরাদ্দ দেয়া হবে। এই সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ।
সারাদেশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়সহ ১৪টি কৃষি অঞ্চলের নয়টি জেলাকে এই প্রকল্পের আওতায় আনাহয়েছে।অগ্রাধিকার কৃষি অঞ্চল বাছাই করে কৃষকের জন্য স্মার্টকার্ড বরাদ্দ দেওয়াহচ্ছে। এই জেলাগুলো হচ্ছে,যশোর, গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বরিশাল,দিনাজপুর, রাজশাহী, বান্দরবান ও ময়মনসিংহ।
প্রাথমিক পর্যায়েএসব জেলার সকল উপজেলার কৃষকরা পাবেন এই কৃষি কার্ড। পরবর্তীতে অন্য অঞ্চলের কৃষকদের এ সেবার আওতায় আনা হবে। বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা নেয়ার সময় কৃষককে এই স্মার্ট কার্ড দেখাতে হবে। পাশাপাশি নানা ধরনের সরকারি সুবিধা নিতে কৃষকদের প্রয়োজন হবে এই কার্ড।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, জেলায় চার লাখ ৯৪ হাজার ৫৭৬ জন কার্ডধারী কৃষক-কৃষাণী রয়েছেন। এরমধ্যে কৃষক চার লাখ ৬৯ হাজার ৫২৭ ও কৃষাণী ২৫ হাজার ৪৯ জন। সদর উপজেলায় ৭৬ হাজার ৪১ জন কৃষক ও দুই হাজার ৮৩৯ জন কৃষাণী রয়েছেন। এছাড়া, শার্শায় রয়েছেন ৬০ হাজার ৬০ জন কৃষক ও দুই হাজার ৬৮০ জন কৃষাণী, ঝিকরগাছায় ৫২ হাজার ৯৪২ কৃষক ও সাত হাজার ১৬০ কৃষাণী, চৌগাছায় ৪৩ হাজার ৯৮১ কৃষক ও তিন হাজার ৫৭৯ জন কৃষাণী, অভয়নগরে ৩২ হাজার ৬২০ কৃষক ও এক হাজার ৯৬৯ জন কৃষাণী, বাঘারপাড়ায় ৫১ হাজার ৩৩০ কৃষক ও ৮৫০ জন কৃষাণী, মণিরামপুরে কৃষক ৯৭ হাজার ৮০৮ ও কৃষাণী দুই হাজার ৭৯২ জন এবং কেশবপুরে ৫৪ হাজার ৭৪৫ কৃষক ও তিন হাজার ১৮০ জন কৃষাণী।
এসব কৃষক-কৃষাণীকে নর্মাল কাগুজে কৃষি কার্ড দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই কার্ড নিয়ে নানা সময়ে বিভিন্ন ঝামেলায় পড়তেন কৃষক। বেশিরভাগ কৃষক-কৃষাণী কাগজের কার্ড নষ্ট করে ফেলেন। এ কারণে নানা ধরনের সহায়তা নিতে তাদের বিপাকে পড়তে হয়েছে প্রায়ই। একইভাবে বিপাকে পড়তে হয় কৃষি কর্মকর্তাদেরও। তারা বরাদ্দের কার্ড ছাড়া অনুদান দিতে পারেন না। কারণ অনুদানের রেকর্ড রাখতে এই কৃষি কার্ড ব্যবহার করতে হয়।
কৃষি কার্ড নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে করা হচ্ছে স্মার্ট কার্ড। এই কার্ডে কৃষকের ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরি থাকবে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, স্মার্ট কার্ডে ডিজিটাল কৃষি প্রোফাইল তৈরি, স্মার্ট কৃষি কার্ড বিতরণ, ডিজিটাল কৃষি তথ্য বিশ্লেষণ ও তথ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা সহজ হবে। এই কার্ডের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের সাহায্যে কৃষক কৃষি উৎপাদনের সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা সহজভাবে গ্রহণ করতে হবে।
যশোরে বর্তমানে কৃষি কার্ডের সাহায্য ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা তিন লাখ ৬০ হাজার ৩৮০। এরমধ্যে কৃষক রয়েছেন তিন লাখ ৪৬ হাজার ১২২ ও কৃষাণীর অ্যাকাউন্ট রয়েছে ১৪ হাজার ২৫৮ টি। এসব অ্যাকাউন্টের মধ্যে সচল রয়েছে তিন লাখ ৫৫ হাজার ৬৯৯ টি। তিন লাখ ৪২ হাজার ৪৯৩ জন কৃষক ও ১৩ হাজার ২০৬জন কৃষাণী তাদের অ্যাকাউন্ট সচল রেখেছেন।
যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ সাজ্জাদ হোসেন জানান, কৃষকদের স্মার্ট কার্ড করা সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কারণ অধিকাংশ কৃষক গ্রামের। তারা সেইভাবে যতœ করে কাগজের কার্ড রাখতে পারেন না। ফলে, সহজেই তা নষ্ট হয়ে যায়। স্মার্ট কার্ড হলে এই সমস্যার সমাধান হবে। তখন কৃষক সরাসরি সরকারের সহযোগিতার আওতায় আসবে। রকারের কাছে তখন নিখুত ডাটাবেজ থাকবে কৃষকের। আরো অনেক দিক থেকে তারা উপকারভোগী হতে পারবে।