মোঃ আনিসুর রহমানঃ সাবাস বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকায় ইতিহাস। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্য দিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নিয়েছে টাইগাররা। রচিত হয়েছে নতুন ইতিহাস। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তাদেরই মাটিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়। তার আগে গত ১৮ মার্চ প্রথম ওয়ানডে জয় ছিল, দেশটিতে লাল-সবুজ বাহিনীর প্রথম জয়। তিন ফরম্যাটে এটি লাল সবুজের প্রতিনিধিদের ২০০তম জয়।
স্বাগতিকদের করা ১৫৪ রানের জবাবে খেলতে নেমে সাবধানী শুরু পায় বাংলাদেশ। ওপেনিং জুটিতে তামিম ইকবাল ও লিটন দাস করেন ১২৭ রান। লিটন দাস ৫৭ বলে ৪৮ রান করে আউট হলেও দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তামিম ও সাকিব আল হাসান। তামিম ৮২ বলে ৮৭ এবং সাকিব ১৮ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে নোঙর করান।
সেঞ্চুরিয়নের সুপার স্পোর্টস পার্ক স্টেডিয়ামে টস হেরে ফিল্ডিং করতে নেমে শুরুর ইঙ্গিতটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। জানেমাল মালান ও ডি কক মিলে ৪৬ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন। কককে মাহমুদউল্লার ক্যাচে পরিণত করেন টাইগার অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট তুলে নিয়েছে তামিম বাহিনী। ৬৬ রানে তাসকিন আহমেদ প্রথম আঘাত হানেন প্রোটিয়া শিবিরে। তার শিকার হয়ে ৯ রানে ফিরে যান কাইল ভেরাইনে। ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা মালানকেও প্যাভিলিয়নে ফেরান তিনি।
মালান ৫৬ বলে ৭ চারে করেন ৩৯ রান। এরপর সে অর্থে আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি বাংলাদেশের বোলারদের সামনে। তাসকিন উদযাপনের উপলক্ষ্য পেয়েছেন আরও তিনবার। তাতে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো পাঁচ উইকেট শিকারের মাইলফলক ছুঁলেন তিনি। একদিন পরই সাকিব আল হাসানের জন্মদিন। বিশেষ এ দিনের আগে উইকেট নিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারও। তিনি দলীয় ৭১ রানে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন প্রোটিয়া দলপতি টেম্বা বাভুমাকে।
ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ব্যাটিং গড় রসি ভ্যান ডার ডুসেনের। প্রায় প্রত্যেকটি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের বোলারদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে থাকেন তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে এই সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচেই টাইগার বোলারদের ভুগিয়েছেন তিনি। তবে এ দিন খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি এ ব্যাটার। ব্যক্তিগত ৪ রানে শরিফুল ইসলামের বলে মিরাজকে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি।
তাসকিনের পাঁচ উইকেটের তালিকায় কাইলে ভেরাইনে, মালান বাদেও আছেন ডোয়াইন প্রিটোরিয়াস, ডেভিড মিলার ও কাগিসো রাবাদা। প্রিটোরিয়াস ২০, মিলার ১৬ ও রাবাদা ৪ রান করেন। এ নিয়ে ৪৮ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তাসকিনের শিকার ৬৭ উইকেট। লুঙ্গি এনগিদির উইকেট নেন সাকিব। ১৩ বলে নামের পাশে এক রানও যোগ করতে পারেননি এনগিদি।
শেষ দিকে কেশভ মহারাজ একাই স্কোর বোর্ডে রান যোগ করছিলেন। তাকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়েছিলেন এনগিদি। মহারাজ ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন শরিফুলের বলে। ইয়াসির রাব্বি সেই ক্যাচ ফেলে দেন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন মহারাজই। তিনি ২৮ রান করে রানআউটের শিকার হন।