মোশাররফ হোসেনঃ বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তীতে ২৭বছর পর দেশে ফেরা ফুটবল নক্ষত্র এনায়েতুর রহমান খানকে সংবর্ধনা দিছে বিএসজেএ। ক্রীড়া সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠনের এ অনুষ্ঠান বাংলাদেশের ফুটবল তারকাদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। তবে ক্রিকেট সংগঠক আহমেদ সাজজাদুল আলম ববি এ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
এনাযেত বললেন, ২৭বছর পর দেশে ফিরে এত ভালোবাসা দেখে আমি অভিভূত। আমি একজন খেলোয়াড় মাত্র। আমার আশা ছিল বাংলাদেশের ফুটবল অনেক উপরে পৌছাবে। তা হয়নি, এজন্য মর্মাহত। এখনও তৃণমূল থেকে ফুটবল খেলোয়াড় খুঁজে বের করে তাদের গড়ে তুলতে হবে। এজন্য দরকার সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা ও তা বাসতোবায়ন।
সিনিয়র সাংবাদিক কামরুজ্জামান বলেন, এনায়েত সত্তর দশকের ফুটবল তারকাদের অন্যতম। গোল করা ও খেলা তৈরিতে দক্ষ ছিলেন। সে এক সোনালী অতীতের কথ। সাধীন বাংলা ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে তার অবদান আজও সরণীয়। মনজুরুল হক বলেন, ষাট ও সত্তর দশকে মাঠ কাঁপানো তারকা খেলোয়াড় এনাইয়েত। এরকম মানের খেলোয়াড় এখন আর নেই।
‘কিংবদন্তীর সঙ্গে’ শিরোনামে এই অনুষ্ঠানের মূল চরিত্র এনায়েতুর রহমান। তার সঙ্গে ছিলেন দেশের আরো অনেক তারকা ফুটবলার গোলাম সারোয়ার টিপু, জাকারিয়া পিন্টু, প্রতাপ শঙ্কর হাজরা, আশরাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু, খুরশিদ বাবুল, আব্দুল গাফফার, শেখ আসলাম সহ আরো অনেকে।
গাফফার, শেখ আসলাম, চুন্নু সবাই এক সুরে বলেন, ‘এনায়েত ভাই দেশের অন্যতম সেরা ফুটবলার নিঃসন্দেহে। তার খেলা দেখে আমরা শেখার চেষ্টা করেছি।’
অনেক দিন পর এনায়েত দেশে ফেরায় সবাই পুরনো দিনের ফুটবল গল্পে মাতেন। সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক উৎপল শুভ্র বলেন, ‘এনায়েত ভাই বাংলাদেশের ফুটবলে বিশেষ এক চরিত্র। তিনি দীর্ঘদিন দেশের বাইরে থাকায় তিনি একটা রহস্যময় চরিত্রে রুপ নেন।’ আরেক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক দ্য ডেইলি স্টারের আল আমিন বলেন, ‘আমি এখানে সাংবাদিক হিসেবে নয়, একজন সমর্থক হিসেবে এসেছি। সব কিংবদন্তিকে কাছ থেকে দেখা সৌভাগ্যের বিষয়। এরা সবাই আমার শৈশব-কৈশোরের তারকা।’
আরিফুর রহমান বাবু বলেন, ‘এখানে আজ যারা উপস্থিত হয়েছেন। তারা সবাই অনেক বড় মাপের খেলোয়াড়। তবে এনায়েত ভাই আমার দৃষ্টিতে বাংলাদেশের সেরা ফুটবলার।’ তিনি ১৯৭৮ সালে এনায়েতুর রহমানের রেফারির সঙ্গে মেজাজ হারানোর ম্যাচের স্মৃতিচারণাও করেন।
এনায়েতুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমি খুবই সাধারণ একজন খেলোয়াড়। আপনাদের এই ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ।’ এনায়েত তার বক্তব্যে আরো বলেন, ‘এখানে যারা আছে তারা সবাই অনেক বড় মাপের ফুটবলার। বিশেষ করে আসলাম। অনেকের অনেক গোল আছে কিন্তু আসলামের গোলগুলো বিশেষ। কারণ তার গোলে দল জিতেছে অধিকাংশ সময়। খুরশিদ বাবুল অত্যন্ত পরিশ্রমী ফুটবলার। চুন্নুও দারুণ কুশলী ফুটবলার।’
এনায়েত দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন। নিজের এই বিচ্ছিন্নতার কারণ স্পষ্ট না করলেও অন্য ফুটবলারদের বিষয় ইঙ্গিত করে পরোক্ষভাবে বলেছেন, ‘অনেকে আমাকে ভালো খেলোয়াড় বলে কিন্তু আমার চেয়ে অনেক ভালো খেলোয়াড় সান্টু, মঞ্জু। তারা দেশে থাকতে পারল না। দেশে সম্মান ও মূল্যায়ন না পেয়ে বিদেশে। ফলে অনেক বাবা-মাই তার সন্তানকে ফুটবলের দিকে দিতে চায় না।’
বক্তব্যের পর স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যদের হাতে বিএসজেএ’র পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়। বিএসজেএ কার্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক দিলু খন্দকার।