নিজস্ব প্রতিবেদকঃ পূর্ব নির্ধারিত সময়ানুসারে কথা ছিল মঙ্গলবার (৬ জুলাই) কাবিননামা সম্পন্ন হবার। আর শুক্রবারে লাল বেনারশী শাড়িতে তার বধূ সেজে বিয়ের পিঁড়িতে বসে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল তৈয়বার। কিন্তু রাতের আঁধারে দূর্বৃত্তদের ছুঁড়া এসিডে চোখ-মুখ ঝলসে গিয়ে যন্ত্রণায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কাতরাচ্ছে সেই তরুণী।
কক্সবাজারের রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের মাঝিরকাটা গ্রামে মঙ্গলবার (৬ জুলাই) ভোররাত ৪টার দিকে এসিড নিক্ষেপের এ ঘটনা ঘটে। এসিডে দগ্ধ তৈয়বা (১৮) রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের মাঝিরকাটা গ্রামের মোজাফ্ফর আহমদের মেয়ে।
নিক্ষিপ্ত এসিডে তার ডান চোখ ও মূখমন্ডল প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিয়ের পিঁড়িতে বসার দু’দিন আগে এমন ঘটনায় হতবিহ্বল পরিবারটি। তৈয়বার বাবা মোজাফ্ফর আহামদ বলেন, প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবার ভোররাত ৪টার দিকে মায়ের সাথে প্রকৃতির ডাক সারতে বেরিয়েছিলো তৈয়বা। কিন্তু কিছু বুঝে উঠার আগেই তৈয়বার মুখে এসিড ছুঁড়ে মারে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা নরপশুরা। ঘটনার পরপরই মেয়েটিকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৬ নম্বর ওয়ার্ড মাঝিরকাটা এলাকার সদস্য (মেম্বার) কামাল হোসেন ভিকটিমের পরিবারের বরাত দিয়ে বলেন, পক্ষকাল আগে পার্শ্ববতী গ্রামের এক ছেলের সাথে তৈয়বার বিয়ের কথা ঠিক হয় বলে জানিয়েছিল মোজাফ্ফর আহমদ। কিন্তু এরই মাঝে বাদশা মিয়ার ছেলেরা মেয়ের শ্বশুর বাড়ি গিয়ে তাকে বৌ না বানাতে হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল মোজাফ্ফর। এ নিয়ে শালিস বসার কথা থাকলেও তিনি (মোজাফ্ফর) চাষের কাজে ব্যস্ত থাকায় আর আসেননি। এরই মাঝে আজ (মঙ্গলবার) ভোরে প্রাকৃতিক ডাকে বের হবার পর তৈয়বা এসিড আক্রান্ত হয়েছে বলে জেনেছি।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল আলম বলেন, এসিড নিক্ষেপের নৃশংস ঘটনার খবর পেয়ে থানা পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পরিবারের সাথে কথা বলে, এসিড নিক্ষেপকারীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করা হবে। এদিকে, জঘন্য এ ঘটনাটি প্রকাশ পাবার পর জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ।