1. doorbin24bd@gmail.com : admin2020 :
  2. reduanulhoque11@gmail.com : Reduanul Hoque : Reduanul Hoque
January 17, 2025, 8:13 am

চলে গেলেন কিংবদন্তি ক্রীড়া শিক্ষক জহুরুল হোসেন

  • প্রকাশিত : শনিবার, আগস্ট ২৮, ২০২১
  • 664 বার পঠিত

মোশাররফ হোসেন : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শারীরিক শিক্ষা বিভাগের অবসর প্রাপ্ত পরিচালক ও কিংবদন্তি ক্রীড়া শিক্ষক ও সংগঠক আ স আ জহুরুল হোসেন আর নেই (ইন্নালিল্লাহে .. রাজেউন )।

গত মঙ্গলবার ২৪ আগষ্ট মরণব্যাধি করোনা তাকে কেড়ে নিল । তবে তিনি দীর্ঘকাল ডায়বেটিকজনিত রোগের অবনতি হলে প্রথমে ধানমন্ডির ইবনে সিনা পরে ইব্রাহিম ডায়বেটিস হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন । ২৪ আগষ্ট ঢাকার বখশিবাজার মসজিদ ও ব্রামমনবাড়িয়ার তারূয়ায় নামাজে জানাজা শেষে সহধর্মিনী ও মেয়ের কবরের পাশে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয় বলে তার ছোট ভাই কানাডা প্রবাসি ফারুক মাহমুদ হোসেন জানিয়েছেন । মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৮০ বছর (১৯৪১ -২০২১ ) ।

কী রেখে গেলেন জহুরুল হোসেন

চারভাই ও ১১ বোনের পরিবারে বেড়ে ওঠেন জহুরুল হোসেন । ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে মাস্টার্স শেষে করে ঢাকা শারিরীক শিক্ষা কলেজ থেকে বিপিএড ও ভারতের গোয়ালিয়র থেকে এমপিএড ডিগ্রি নেন । ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগে একমাত্র শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন ।শূণ্য থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে শারীরিক শিক্ষা বিভাগ গড়ে তোলেন ।উত্তর ক্যাম্পাসে পাহাড়ের কোলঘেষে তৈরি করেন ফুটবল ,হকি, ক্রিকেট ,এথলেটিকস,বাস্কেটবল ,ভলিবল, লন টেনিস মাঠ ।টিন শেড একতলা ভবনের কার্যালয় থেকে পরিচালনা করতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার খেলা । ছিলনা কোন জিমনেসিয়াম । কিছু সরনজাম দিয়ে চলতো একাজ । । এখন যা পূর্ণতা পেয়েছে ।তবে আজও প্রাকৃতিক আদলে গড়ে ওঠেনি মাঠের কোলঘেষে গ্যালারি ।

স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭২-৭৩ সালে রকিব কোরাইশি ও নুরুল ফেরদৌস শারীরিক শিক্ষা বিভাগে যোগ দেন ।১৯৭৬ সালে আসেন মোজাহিদ হোসেন । কোরাইশি হকি ,এথলেটিকস, নুরুল ফেরদৌস ফুটবল , ক্রিকেট , মোজাহিদ হোসেন ভলিবল ,বাস্কেটবল পরিচালনা করতেন ।

এরপর সাতারে রুহুল অমিন,ফুটবল ও হকিতে ফারুক মাহমুদ হোসেন ,এথলেটিকস ও মহিলা খেলাতে রাজিয়া কোরাইশি ,মোয়াজ্জেম হোসেন বাস্কেটবল এথলেটিকসে , দায়িত্ব পালন করেছেন । বর্তমানে আনিস এথলেটিকস ও শরীর চর্চা, হাবিবুর রহমান এথলেটিকস ,সিরাজউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর ক্রিকেট ,রাশেদ হকি ও শোয়েব ভলিবল পরিচালনা করছেন । এখান থেকে রকিব কোরাইশি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় , নুরুল ফেরদৌস ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, মোজাহিদ হোসেন সিলেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে গেছেন ।ফারুক মাহমুদ হোসেন কানাডা থেকে লেজার স্টাডিজে মাস্টার্স করেন ।এখন ব্যবসা করছেন অটোয়ায় ।

কর্মকর্তা ইসলাম , ইউসুফকে গড়ে তোলেন জহুরুল হোসেন ।ইউসুফ এখন ডেপুটি রেজিস্ট্রার । মাঠ বিষয়ক টেকনিশিয়ান সুশীল , কাদের , জাকের ,জামাল প্রয়াত । সেলিম অবসরে গেছেন ।সাবের ও সহ অন্যরা মাঠের দায়িত্ব পালন করছেন ।২০১৭ সালে বহু প্রতীক্ষিত জিমনেশিয়াম চালু করা হয় । এখানে বাস্কেটবল ,ভলিবল ,ব্যাডমিন্টন ,টেবিল টেনিস সহ ইনডোর প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় ।তবে এর আরও প্রসার দরকার ।

জাতীয় ক্রীড়া তারকা ও অর্জন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জহুরুল হোসেন ও পরবর্তী শিক্ষকদের পরিচালনায় ১৯৭৪ ও ১৯৮৪ তে হকি , ১৯৭৪ সালে বাস্কেটবল, ১৯৮৭-৮৮ তে ক্রিকেট এ আন্ত; বিশ্ববিদ্যালয় খেলায় শিরোপা অর্জন করেছে ।এ ছাড়া এথলেিেটকসে মোশাররফ হোসেন শামীম ( ১০০ ও ২০০ মিটার ) আজিজা খানম ( শট পুট ) ,শহিদুর রহমান ( হফ স্টেপ এন্ড জ্যাম্প ), আনিস ( হাই জ্যাম্প ) কাজী আবদুল আউয়াল (৫০০০ ও ১০ ০০০ মিটার দৌড়) এ জাতীয় স্বর্ণপদক জেতেন ।

তদুপরি জাতীয় তারকা ফুটবলার আশীষ ভদ্র ,সুহাস বড়–য়া ,মঈন ,জসিম উদ্দিন ,ফখরুল ইসলাম কামাল, মান্নান, ক্রিকেটার নোভেল ,নান্নু ,আকরাম ,শহিদুর রহমান ,মোরশেদ ,রুবেল ,আফতাব , ভলিবল তারকা নাসির ,ইসমাইল কুতুবি, হকি তারকা আজিজুল আলম সেলিম ,ব্যাডমিন্টন চ্যামপিয়ান অজিত দত্ত ,সুজিত দত্ত , ওয়াহিদ বাবু , টেনিস তারকা কামরুল হাসান ,টেবিল টেনিস তারকা রুপম দত্ত, বাস্কেটবল তারকা এডওয়ার্ড গোমেজ, মুজিবল হক মানিকসহ বর্তমানের অনেক তারকা খেলায়াড় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ।

“ক্রীড়া গড়ে মৈত্রী” এ পরিবেশ সৃষ্টি করেই জহুরুল হোসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সর্বদা মূখরিত রেখেছেন । ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারিদের সহযোগিতায় খোলা মাঠে সব খেলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার মাধ্যমে জহুরুল হোসেন হয়ে ওঠেন কিংবদন্তি এক ক্রীড়া সংগঠক । পাশাপশি রোভার স্কাউটের মাধ্যমে রাত্রিকালীন বয়স্ক শিক্ষা স্কুল পরিচালনা, বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা সমিতি সভাপতি ,ক্যাম্পাস শিক্ষক ক্লাব পরিচালনা , পরিবহন বিভাগ পরিচালনা ,নিরাপত্তা বাহিনি পরিচালনা, ইউওটিসির ব্যবস্থাপনা কাজ দক্ষতার সাথে ধীর স্থিরভাবে করেছেন । যেন অফুরন্ত এক শক্তির আঁধার ।

কন্যাদের মেধায় বিশ্ববিদ্যালয় উজ্জীবিত

দুই কন্যা । নাম রেখেছিলেন উপল ও উতল । বড় মেয়ে উপল এসএসসি ও এইচ এসসিতে ছিল মেধাতালিকায় । উপল ইংরেজি সাহিত্যে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষকতা করেছেন । এখন সে প্রয়াত ।আর উতল ছাড়িয়ে গেল বড় বোনকে। এসএসসিতে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অর্জন করে । তার নাম অধ্যাপিকা ডাঃ মাসুদা মোহসেনা উতল সলিমুল্লাহ মেডিকেল থেকে এমবিবিএস শেষে যুক্তরাজ্যের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন বর্তমানে ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত । তার মেয়ে অহনা হাসান আইনে লন্ডন থেকে পড়া শেষ করে বর্তমানে ঢাকা আইন সালিশ কেন্দ্রের আইনবিদ । ছোট মেয়ে অন্বেষা হাসান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইনজিনিয়ারিং পড়ছে ।

নেপথ্য কারিগর:

একজন সীমাহীন কর্মব্যস্ত জহুরুল হোসেনের সহধর্মিনী অধ্যাপিকা আতিয়া আহমেদের নেপথ্য সহযোগিতায় তার উত্তরসূরিদের সাড়া জাগানো কৃতিত্বের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারি আজও উজ্জীবিত ও গর্বিত । জনপ্রিয় অধ্যাপিকা আতিয়া আহমেদ চট্টগ্রাম কলেজ , সিটি কলেজ ,গার্লস কলেজে রসায়ন পড়াতেন ।তিনি প্রয়াত । এক সফল পরিবার বলা চলে ।

সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০
১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭৩০৩১
© All rights reserved © 2024 doorbin24.Com
Theme Customized By Shakil IT Park