1. doorbin24bd@gmail.com : admin2020 :
  2. reduanulhoque11@gmail.com : Reduanul Hoque : Reduanul Hoque
September 13, 2024, 5:10 am

ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রযুক্তিভাবনা

  • প্রকাশিত : শুক্রবার, এপ্রিল ২৩, ২০২১
  • 388 বার পঠিত

অজিত কুমার সরকারঃ উন্নত প্রযুক্তির প্রভাবে আমাদের চারপাশে প্রায় সবকিছুই দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। শিল্প, কৃষি, স্বাস্থ্য, আর্থিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা খাতে বিগ ডাটা, ক্লাউড কম্পিউটিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মেলবন্ধন ঘটানো হচ্ছে। ফলে এসব খাতে পরিবর্তন ঘটছে অত্যন্ত দ্রুত। শিক্ষিত-অশিক্ষিত, নারী-পুরুষ আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে নিজ, সমাজ ও রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সমৃদ্ধির দিকে। প্রাযুক্তিক উত্কর্ষ ও পরিবর্তনের সঙ্গে যেসব দেশ তাল মিলিয়ে চলছে তারা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। চার দশক ধরে প্রযুক্তির প্রবণতা ও উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ করে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিষ্ঠাতা ক্লস শোয়াব তার ‘ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলেশন’ গ্রন্থে লিখেছেন, ‘অগ্রসর প্রযুক্তির আবির্ভাবে বিশ্ব সমাজ উন্নয়নের এক নতুন যুগে প্রবেশ করছে। সর্বব্যাপী মোবাইল সুপার কম্পিউটিং, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), রোবোটিকস, ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, থ্রিডি প্রিন্টার, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং আমাদের চারপাশের প্রায় সবকিছুতেই প্রভাব ফেলছে। রাজনীতি, ব্যবসায় এবং সামাজিক পরিবেশ বিবর্তিত হয়ে সুযোগ এবং বিপদ দুই-ই সৃষ্টি করবে।’

ক্লস শোয়াব চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে অগ্রসর প্রযুক্তি ব্যবহার ও প্রভাবে ভবিষ্যতে বিপুলসংখ্যক অদক্ষ মানুষের চাকরি হারানোর আশঙ্কা করছেন। বিশ্বব্যাংক অবশ্য তেমনটি মনে করে না। তারা মনে করে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে কিছু অদক্ষ মানুষ চাকরি হারাবে ঠিকই কিন্তু তা শ্রমবাজারে সংকট সৃষ্টি করবে না। পূর্ববর্তী তিনটি শিল্পবিপ্লবের কারণে কোনো ব্যাপক বেকারত্ব দেখা দেয়নি। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবেও তেমনটির আশঙ্কা নেই। অগ্রসর প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রভাব নিয়ে যখন চাকরি হারানার ঝুঁকি এবং অমিত সম্ভাবনা ও সুযোগ সৃষ্টির কথা বলা হচ্ছে তখন বাংলাদেশেও এসব প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটছে। একটি প্রযুক্তিবান্ধব ইকোসিস্টেম গড়ে ওঠার কারণেই তা সম্ভব হচ্ছে। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এইচএফএস রিসার্চ-এর ‘বাংলাদেশ ইমার্জেস অ্যাজ এ ডিসটিনক্টিভ ডিজিটাল হাব ফর ইমার্জিং টেকনোলজিস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে একটি গতিশীল ইকোসিস্টেম গড়ে উঠেছে। যারা ডিজিটাল পণ্য ও সেবা নিয়ে কাজ করছে এরূপ অন্তত ১০টি প্রতিষ্ঠান অত্যাধুনিক প্রযুক্তির পরীক্ষানিরীক্ষা করছে। বিকাশ, পাঠাও, সেবাএক্সওয়াইজেড, ডেটা সফট, বিজেআইটির মতো প্রতিষ্ঠানের রোবোটিক প্রসেস অটোমেশন (আরপিএ), ব্লকচেইন, স্মার্ট অ্যানালাইটিকস, অগমেন্টেড রিয়েলিটি, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, আইওটির ওপর একাধিক উদ্যোগের পাইলটিং ও পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে। অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসায়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য কাস্টমার অভিজ্ঞতা, বিক্রি ও বিপণন, রিয়েল টাইম সিদ্ধান্ত গ্রহণ, উদ্ভাবনী ব্যবসায় এবং বিজনেস মডেল তৈরিতে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করছে।

আরও পড়ুনঃ

আগামী ২৮ এপ্রিলের পর দেশে আর লকডাউন থাকছে না

আগামীর প্রযুক্তির প্রবণতা, ব্যবহার ও প্রভাব গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। তারা আগাম প্রস্তুতিও গ্রহণ করছেন। ২০১৭ সালের ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। কারণ দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন আনছে। ফলে অর্থনৈতিক বিকাশ এবং শিল্পায়ন ঘটছে দ্রুত।’ এরপর তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্প ও কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা সভায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওপর নীতিমালা ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশনা দেন। প্রতিমন্ত্রী পলককে এ ব্যাপারে ত্বরিত পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়। তার বিভাগের অধীন এটুআই প্রোগ্রাম ও বিসিসির এলআইসিটি প্রকল্প বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে আলোচনা করে আইওটি, ব্লকচেইন, রোবোটিকস স্ট্র্যাটেজির খসড়া প্রণয়ন করে, যা ইতিমধ্যে মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদিতও হয়। এলআইসিটির প্রকল্পের আওতায় ফাস্ট ট্রাক ফিউচার লিডার (এফটিএফএল) কর্মসূচিতে এক বছর আগে থেকেই এআই, আইওটি, ব্লকচেইন, রেবোটিকসসহ অগ্রসর প্রযুক্তিতে দক্ষ মানুষ তৈরির প্রশিক্ষণ চলছে। বিসিসির সব প্রশিক্ষণের সার্টিফিকেট সংরক্ষণ করা হচ্ছে ব্লকচেইন প্রযুক্তিতে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘প্রযুক্তি কখনো থেমে থাকার জন্য আসে না। সব সময় এর রূপান্তর ঘটছে। প্রযুক্তির এ অগ্রগতির সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে।’ আগামী দিনে যে ১০টি অগ্রসর প্রযুক্তি বড় পরিবর্তন ঘটাবে তা চিহ্নিত করে করণীয় নির্ধারণ করেছে সরকার। এই ১০টি প্রযুক্তি হচ্ছে অ্যাডভান্সড ম্যাটেরিয়ালস, ক্লাউড টেকনোলজি, অটোনোমাস ভেহিকলস, সিনথেটিক বায়োলজি, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি, এআই, রোবট, ব্লকচেইন, থ্রিডি প্রিন্টিং ও আইওটি।

অগ্রসর প্রযুক্তি কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজন সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশের তরুণরাই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে সেরা উদ্ভাবনী তৈরি করতে পারে তার উদাহরণ তো রয়েছে। হংকংয়ে আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড ২০২০-এ অংশ গ্রহণের দেশে ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দল বাছাইয়ে ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা। ২০২০ সালের জুলাইয়ে হংকংয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ব্লকচেইন অলিম্পিয়াড অ্যাওয়ার্ড ২০২০-এর ছয়টি পুরস্কারের মধ্যে বাংলাদেশ দুটি পুরস্কার অর্জন করেআর ১২টি দলের ১২টি প্রকল্পই পায় অ্যাওয়ার্ড অব মেরিট। টেক একাডেমি নামে একটি সংস্থার তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের তরুণদের একটি দল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফার্স্ট গ্লোবাল নামের একটি সংস্থার আয়োজনে স্কুল পর্যায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক রোবোটিকস অলিম্পিয়াডে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। বাংলাদেশের তরুণদের এই সাফল্য এবং অগ্রসর প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও সম্ভাবনা কাজে লাগানোর ব্যাপারে সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগ আমাদের আশাবাদী করছে।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক

সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
© All rights reserved © 2024 doorbin24.Com
Theme Customized By Shakil IT Park