মোশাররফ হোসেন: সব কটা জানালা খুলে দাও না, ওঁরা আসবে, চুপি চুপি। যারা এ দেশটাকে ভালবেসে দিয়ে গেছে প্রাণ…
আজ বাংলাদেশের ৫১তম বিজয় দিবস । বাংলাদেশ সহ বিশ্বজুড়ে পালিত হবে আনন্দ ও বেদনার উৎসব। সাভার জাতীয় সৃতিসৌধে জনতার ঢল নামবে । দেশে ও বিদেশে বের হবে শোভাযাত্রা । চলবে আলোচনা ও বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর অমর নির্দেশ, এবারের আমাদের মুক্তির সংগ্রাম…এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম… ঘোষণা র পর সাড়ে সাত কোটি বাঙালি রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে । পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ১১টি অঞ্চলে বিভক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও মুজিব বাহিনী, কাদেরিয়া বাহিনী, হেমায়েত বাহিনীরসহ মুক্তি সেনার দল ৯মাসের সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন । অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৯০হাজার সেনার দল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আত্মসমর্পণের পর বাংলাদেশ বিজয় লাভ করে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয় ২৫ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে । অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদদিন আহমেদসহ মুজিব নগর সরকার ১৭এপ্রিল ১৯৭১, মেহেরপুর আম্রকাননে শপথ গ্রহণ করেন।
এরপর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে যুদ্ধে অংশ নেন । ভারতে আশ্রয় নেয় ১কোটি বাঙালি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অত্যাচার ও নারকীয় হত্যাকান্ড দেখে মানুষ বাঁচার জন্য নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যায় । তৎকালীন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আন্তরিক ও মানবিক উদ্যোগ ও সহযোগিতা বাংলাদেশ যুদ্ধে জয়ে বিশাল ভূমিকা রাখে। সবই আজ ইতিহাস ।
রাশিয়া, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের পক্ষে কাজ করলেও যুক্তরাষ্ট্র ছিল পাকিস্তানের পক্ষে । এক পর্যায়ে ভারত, রাশিয়ার জোরালো সহযোগিতা স্বাধীন বাংলাদেশের বিজয় সুনিশ্চিত করে। ৩০লক্ষ মানুষের আত্মদান ও ১ লক্ষ নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলেছে । কিন্তু এখন আবার একাত্তর এর পরাজিত শক্তি, দেশী ও বিদেশী সাধু শয়তান মিলে ষড়যন্ত্র করছে। বিদেশি কূটনীতিকদের কয়েক জন নানা ফন্দি করছেন। আবার মাইনাস টু ফর্মুলা? আসলে মাইনাস ওয়ান। অনির্বাচিতদের দিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র চলছে ।
দেশের ভেতরে এসব কালো শয়তানরা চিহ্নিত । দুই ডক্টরেট, দুই সম্পাদক, দুই সুশীল এখন নানা কৌশলে সক্রিয় । ঐক্যবদ্ধ হতে হবে জনগনের। একাত্তরের মত সব কিছু রুখে দাঁড়াতে হবে ।
দূরবীণ এর পক্ষে একাত্তরের নিহতদের প্রতি জানাই লাল গোলাপ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ।