আজ দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) এর সুনীতি প্রকল্প মোহাম্মদপুর হাবের উদ্যোগে দুপুর ২ টায় ইউএসটি মিলনায়তন, আদাবর, মোহাম্মদপুরে গৃহকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে গৃহকর্মীদের জন্য পরিষেবা খাত সুযোগ ও সেবা গ্রহণের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপত্তিত্ব করেন শংকর চন্দ্র অধিকারী প্রকল্প কর্মকর্তা সুনীতি প্রকল্প। উক্ত সভায় অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবুল কালাম আজাদ, সভাপতি, ট্যানারি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, তারেক আজিজ, প্রকল্প সমন্বয়ক, অক্সফাম বাংলাদেশ, সৈয়দা সামিহা আজিম, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ, পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল হুদা, শিল্পী সাহা,আইন ও সালিশ কেন্দ্র, কেয়া আক্তার , ব্লাস্ট, রাসেল আহম্মেদ সজীব, ফ্যাসিলেটেটর, সমাজসেবা অধিদপ্তর, ফরহাদ হোসেন, সূর্যের হাসি ক্লিনিক, নাসরীন বেগম, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, কে এম শহীদুজ্জামান । সভায় আরো আলোচনা করেন গৃহকর্মী ফোরামের পক্ষ থেকে জান্নাতুল ফেরদৌস, কোহিনূর বেগম, শারমিন আক্তার, আকলিমা বেগম প্রমুখ।
উক্ত সভায় ডিএসকে সুনীতি প্রকল্পের, প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান সভার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সর্ম্পকে অবহিত করেন। এছাড়াও তিনি তিনটি সচেতনতামূলক ভিডিও প্রদর্শন করেন । উক্ত সভায় সরকারের পরিষেবাসমূহ গৃহকর্মীরা কীভাবে পেতে পারেন তা নিয়ে বিস্তারিত উপস্থাপনা ও আলোচনা করেন রাসেল আহম্মেদ সজীব , ফ্যাসিলিটেটর, সমাজসেবা অধিদপ্তর । তাঁর কাছ থেকে পরিষেবাসমূহ নিয়ে যেসব বিষয়ে সংশয় ছিলো, তা নিয়ে প্রশ্ন করেন গৃহকর্মীরা। উত্তরে বক্তা অনলাইন পদ্ধতি, সহজীকরণ এবং হেল্পলাইন ব্যবহারের সুস্পষ্ট পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি আলোচনা করেন যে, জন্ম নিবন্ধন, নারী নির্যাতন, স্বাস্থ্য বাতায়ন এবং শিশুদের জন্য সুরক্ষা বিষয়ক পরিষেবাগুলো এখন যথাযথভাবে কার্যকর। এছাড়াও ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলগুলো ব্যবহার করার জন্য কীভাবে আলামত রক্ষা করতে হবে যাতে ভিকটিম উপযুক্ত সেবা পেতে পারেন এবং পারিবারিক আদালতে বিভিন্ন মামলা কোন আদালতে যাবে, দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা কোনগুলো, জিডি,অভিযোগ ও মামলা করার ধাপ ও প্রক্রিয়া নিয়ে ব্যাখ্যা করেন। এরপর পর্যায়ক্রমে বয়ষ্কভাতা, বিধবা ভাতা ও মাতৃত্বকালীন ভাতা, ডে কেয়ার সেন্টার সুবিধা পাবার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ ও সমাধান নিয়ে কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, পরিষেবাগুলো আমরা নিতে অসুবিধায় পড়ছি কারণ আমাদের যথাযথ জ্ঞানের অভাব । আবুল কালাম আজাদ, সভাপতি, ট্যানারি ওয়াকার্স ইউনিয়ন বলেন, গৃহকর্মীদের আইএলও শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু আইন পাশ করতে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিচ্ছে। তাই এই আইনটি পাশ করার জন্য নিজেদের অধিকারের জন্য নিজেদের লড়াই করতে হবে।অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ এর সুনীতি প্রকল্পের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার সৈয়দা সামিহা আজিম বলেন, সার্ভিস ম্যাপিংয়ের জন্য এ ধরণের সভা খুব প্রয়োজনীয়। এ কার্যক্রম চলতে থাকলে যে আইনটি নেই তা একদিন প্রতিষ্ঠা পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সরকারী কর্মকর্তা এ কে এম শহীদুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ ঘনবসতির দেশ। সেজন্য এদেশে সম্পদের সুষম বন্টনের জন্য প্রতিনিয়ত চাপের মুখে পড়তে হয়। অনেক দেশ আছে যেগুলো আয়তনে বিশাল কিন্তু লোকসংখ্যা কম। সে দেশগুলো যথেষ্ট সম্পদশালী। সেজন্যে আমরা প্রতিনিয়ত পিছিয়ে পড়ছি।তথ্যই আসলে যেকোনরকমের প্রতিকূল পরিবেশকে মোকাবেলা করার সবচেয়ে বড় শক্তি। অতিরিক্ত জনসংখ্যা ও তথ্য নিতে না পারার অক্ষমতাই আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ । ডিএসকের যুগ্ম পরিচালক প্রদীপ কুমার রায় বলেন, গার্মেন্টস, এনজিওসহ অন্যান্য সকল কর্মস্থলে যেসকল সুবিধা শ্রমিকেরা পান তা কেন গৃহকর্মীরা পাবেন না এ বিষয়ে কথা বলেন । জাতীয়ভাবে তাদের যথাযথ মজুরি ও অতিরিক্ত সময়ের মজুরি সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেবার জন্য আহবান জানান। সরকারী কর্মকর্তা নাসরীন বেগম গৃহকর্মীদের জন্য যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের আওতাধীন জীবনদক্ষতা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের শিল্পী সাহা এবং ব্লাস্ট থেকে কেয়া আক্তার। তারা প্রত্যেকেই গৃহকর্মীদের আটকে রাখা মজুরি ও নির্যাতন সংক্রান্ত সমস্যার জন্য তাদের সংস্থা যেসব প্রক্রিয়া রেখেছে এ বিষয়ে কথা বলেন সেইসাথে হেল্পলাইন প্রদান করেন।অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ প্রকল্প সমন্বয়ক তারেক আজীজ বলেন, গৃহকর্মীদের অধিকার আদায়ে গৃহকর্মী ফোরামকেই এগিয়ে আসতে হবে, এই আন্দোলন অন্য কোন সংস্থা বা সংগঠনের নয়। উক্ত সভায় সমাপনী বক্তব্যে গৃহকর্মী রোকসানা পারভীন দিপু তাঁর পরিচয় ও জীবনের সাফল্যের কথা ব্যক্ত করেন। বিজ্ঞপ্তি।